Friday, March 24, 2017

                                 লাল মাটি ও সোনাঝুরি

“লাল মাটির দেশ”- সত্যিই তাই চারিদিকে লাল মাটির শহর ও গ্রাম নিয়ে বীরভূম। আর তার মধ্যে বোলপুর ও সেই সন্নিকটে শান্তিনিকেতনেও যেন লাল মাটির ছোঁয়া। সঙ্গে রইল কবিগুরুর একগুছ স্মৃতি। শহর থেকে কিছুটা এগিয়েই একটি সুন্দর গ্রাম, নাম তার বনের পুকুর ডাঙা। চারিদিকে সবুজে সবুজ আর মাঝ দিকে লাল মাটির পথ আর বাড়িগুলো তৈরি মাটি দিয়ে। বাড়ির দেয়াল গুলো শোভা পেয়েছে মাটির তৈরি বিভিন্ন মূর্তির কারুকার্য দিয়ে। ছোটবড় নানা রকমের রং বেরঙের বাড়ি গুলোর মধ্যে থাকে সেখানকার সাঁওতাল উপজাতির লোকজন। গ্রামটির ঠিক পাশেই আছে মস্ত শালবন আর সোনাঝুরি গাছের সারি, আর এই বসন্তের শেষে গ্রীেষ্ম পাতা ঝরা সেই রাস্তা গুলো শোভা পায় নানান রঙ্ের পাতায়। তার পাশেই রয়েছে শনিবারের সোনাঝুরির হাট। শনিবারের হলেও বর্তমানে তা প্রায় প্রতিদিনের একটি আনন্দদায়ক জায়গা। সারা দেশের অনেক মানুষজন ভিড় জমায় এই হাটে। দুপুরের পর থেকে গোধূলি লগ্নে হাটের সমাপ্তি হয়। সেখানকার লোকেদের তৈরি হাতের কাজ, শিল্প, খাবার সমস্ত মিলিয়ে একটা মেলায় পরিণত হয় এই হাট। শান্তিনিকেতনে এসে সকলেই চায় এই দিনটি এই হাটে কাটাতে। আর তার সাথে তো আছেই কেনাকাটা, খাওয়া দাওয়া এবং এরসঙ্গে এখানকার স্নানীয় লোকশিল্পীদের সাথে কোমর দুলিয়ে নাচের মজা নেওয়া। সমস্ত ঘটনাটি ঘটে সেই দুপুরের পর থেকে গোধূলি পর্যন্ত সময়ে। শনিবারে শহরের বাবুদের জন্যে পসরা সাজিয়ে তাদের উপার্জনের পথ হিসেবে এই হাটকেই বেছে নিয়েছেন এখানকার স্নানীয়রা। সবমিলিয়ে একটা মজার সময় একসাথে সমস্ত কিছুকে একসাথে পাবার এটাই একমাত্র জায়গা, যেখানে লোকে আসে কবিগুরুর মাটিতে মাথা ঠেকিয়ে আর কিছু বাড়তি আনন্দের সাক্ষী নিয়ে যেতে।

Sunday, March 19, 2017

                                                    দুর্গমতার মাঝে আনন্দ 


“এই পথ যদি না শেষ হয়………… যদি পৃথিবীটা স্বপ্নের দেশ হয়, তবে কেমন হত তুমি বলত”। দেশের বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ আমার একটা নেশায় পরিণত হয়েছে। বেশ কয়েকটা রাজ্যই আমার দেখা। তবে তার মধ্যে সিকিমটা যেন একটু অন্যরকম। চারিদিকে পাহাড় আর শীতের একটা অনুভূতি, আবার কিছুটা এগোতেই যেন চারিদিক বরফে ঢাকা।  সিকিম একটি সাজানো গোছানো শহর যার চারিদিকে রয়েছে সুন্দর পাহাড় ঘেরা প্রাকৃতিক দৃশ্য আর শহরটা যেন মেঘের উপর ভাসছে । যাবার পথেই প্রথম অনুভূতি মেঘের সাথে খেলা। খুব একটা পরিষ্কার জায়গা সিকিম আর চারিদিক যেন ছবির মতো আঁকা। ছিলাম শহরের মাঝখানেই, আর তার পাশেই ছিল মহাত্মা গান্ধী মার্গ- যেখানে সন্ধ্যে হলেই শুরু হয় বিভিন্ন ভাষাভাষীর লোকেদের আগমন। সময় ছিল সীমিত তাই আর দেরি না করে পরেরদিন বেরিয়ে পড়লাম শহরের আশেপাশের সুন্দর জায়গায় ঘুরতে আর সাথে নিয়ে আমার ক্যামেরা টা। এক পাহাড় থেকে অন্য পাহাড়ের বুক চিরে এগিয়ে চলেছি আর দেখছি সুন্দর সব জায়গা। এ যেন দিন ফুরলেও মন ভরে না। সারাদিন ঘুরে আর কনকনে ঠাণ্ডার চাদর চাপিয়েই চলল এদিক ওদিক ঘোরা। পরেরদিনের উদ্দেশ্য উত্তর সিকিমের কিছু জায়গা। সকালে যতই সেদিকে এগিয়ে চলছি ততই যেন মনে হচ্ছে ঠাণ্ডা বাড়ছে। সেখানকার পথ গুলো কিছুটা দুর্গম কিন্তু আনন্দদায়ক আর চারিদিকে সাদা বরফে ঢাকা। স্থানিয়রা কাজ করছে বরফ সরিয়ে রাস্তা তৈরি করতে আর আমরা এগিয়ে চলেছি সেই পথ ধরে। মাঝে একটু বিরতি-জায়গার নাম ছাঙ্গু বাজার। স্থানিয়দের তৈরি খাবার খেয়ে আবার বেরলাম সামনের দিকে পরবর্তী উদ্দেশ্য ছাঙ্গু লেক আর ভারত-চীনের আন্তর্জাতিক সিমানা। লেক্ টা পুরোই বরফে ঢাকা আর পাশেই দাড়িয়ে  চমরীগাইদের নিয়ে তাদের মালিক, কিছু টাকা উপার্জনের জন্য। দিনের আকাশটা ছিল খুবই ভালো তাই মজাও ছিল দ্বিগুণ। দিনের শেষে ফেরার পথে মাঝ রাস্তায় পেলাম বৃষ্টির, তবে কিছুটা ভয় আর মজা নিয়েই এগচ্ছি সামনের দিকে হঠাৎ শুরু হল বরফ পড়া যা ছিল আমাদের সকলের আশার বাইরে। যাইহোক সেই সময় সবাই গাড়ি থেকে নেমে মজা নিলাম তার। পথে ফেরার সময় মনে পরছিল সেই সব কাটিয়ে আসা মজা আর আন েন্দর কথা যা ভোলার নয়। পাহাড়ের উপর থেকে ছাঙ্গুর ছবিটা যেন অসাধারন। ২/৩ দিন সেরকম কাটিয়ে ফিরে এলাম বাড়ির পথে। তবে সেই শেষ মুহূর্তের মজাটা যেন আর কয়েকবার যাবার আগ্রহটাকে আর বাড়িয়ে দিল। 

Monday, March 13, 2017

                                                    “ এক টুকরো বসন্ত ”


“বাতাসে বহিছে প্রেম নয়নে লাগিল নেশা......বসন্ত এসে গেছে ”। শান্তিনিকেতনের বসন্তে যেন প্রকৃতির ছোঁয়া। এখাঙ্কার নিয়ম প্রাকৃতিক রঙের ব্যবহারে দোল উৎযাপন। আর মনে পরে কবিগুরুর রেখে যাওয়া এইসব উপহার যা আমাদের জন্য এক অমূল্য পাওনা। চারিদিক যেন লকে লোকারন্ন। আকাশটা যেন লাল- নিল-হলুদ রঙে কেউ রাঙিয়ে দিয়েছে। এই আনন্দ সবাই যেন ভাগ করে নিতে সমস্ত বাঁধা ছেড়ে এসেছে এই লাল মাটির দেশে আর সবাই যেন মেতেছে রঙের খেলায়। সেখানে ছিল না কোন জাতি-ধর্মের ভেদ, ছিলনা কোন ভিন্ন দেশের মানুষের মধ্যে হিংসা, চারিদিকে যেন বেজে উথছে-“ ওরে গৃহবাসী, খোল দ্বার খোল...” দিয়ে প্রভাত ফেরীর যাত্রা। সারাদিনের মনমুগ্ধ করা বিভিন্ন অনুষ্ঠান আর চারিদিকে রঙের খেলা-সব মিলিয়ে এক অদ্ভুত আশ্চর্য চিত্র যা কোনোদিন না ভোলার মতো। ২০১৭-র এই বসন্ত আমার এখানকার ছাত্র জীবনের আমার শেষ বসন্ত। তাই কোন মুহূর্ত বাদ না দিয়ে সারাদিনটা কাটালাম সব বন্ধুদের সাথে। মজা- হুল্লোড়-আবির খেলা নাচ-গান সবই মনে পরবে বছর ঘুরতেই, সকালের অসমাপ্ত ঘুম ছেড়ে সেই বৈতালিক আর তারপর সারাদিনের খুশির আমেজ এই সমস্ত ব্যাপারটাকে পাবোনা কাছে। তবে যা পেয়েছি, যা নিয়ে যাব তার পুরোটাই যেন অমূল্য সম্পদ আর যাকে কাজে লাগিয়ে খুলবে ভবিষ্যতের দ্বার। সবসময়ই যেন একটা খুশি মনের মধ্যে দোলা দেবে আমিও কোনদিন এর আনন্দ উপভোগ করেছিলাম  আর তার সাক্ষী ছিলাম এইসব উজ্জল মুহূর্তের।


  

Thursday, March 9, 2017


                                                 ইতিহাসের একাল সেকাল 


সময় জিনিসটা সকলের জন্যই খুব মূল্যবান ।
ঐতিহাসিক তাজমহল
আমাদের কাজ শুধু সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে চলা আর তার সাথে সমান তালে নিজেকে সময়ের সাথে খাপ খাইয়ে বেড়ে ওঠা। নিজেকে শ্রেষ্ঠ প্রমান করার দৌড়ে ছুটছে সবাই। শান্তিনিকেতনের বসন্তের আগমনের অপেক্ষায় সকলেই। বসন্তের সেই মুহূর্ত যেন দরজায় কড়া নাড়ছে। সেই অপেক্ষাকে সাথে নিয়ে চললাম রাজধানী দিল্লিতে, আরও কিছু জ্ঞান আর সুন্দর কিছু অনুভূতি উপলব্ধি করতে। মাঝের সমস্ত বাধাবিপত্তি কাটিয়ে এগোলাম সেই দিকে। পথে যেতে যেতে দুলকি চালে এগিয়ে যাওয়া বিভিন্ন রাজ্যের উপর দিয়ে আর দেখা কিছু অজানা-অচেনা জায়গার সুন্দর ছবি। দিন ৪/৫ এর এই শিক্ষা লাভের ভ্রমণ একদিকে যেন ঠাকুমার ঝুলির ভেতরে জ্ঞানের ভাণ্ডার। সম্পূর্ণ এক নতুন অনুভূতি তার মধ্যে রয়েছে নতুন কাজ, অভিজ্ঞতা, নতুন মুখ-আর পরিচয় তার সাথে তো আছেই অনেক মজা। যাতায়াতের পথের সঙ্গী রাজধানীর কিছু স্মৃতি-বহনকারী জায়গা। এ যেন এক স্বর্গপ্রাপ্তির উদাহরণ স্বরূপ। কাজের ফাঁকে ছুটে চলেছিলাম কখনও ইন্ডিয়া গেট আবার কখনও বিশালাকার জামা মসজিদ, বিশালাকার সেই লাল কেল্লা, চাঁদনি চকের সেই বাজার, কখনও আবার নতুন দিল্লী থেকে পুরনো দিল্লী পথে আরও কিছু সুন্দর দৃশ্য। ছোটবেলায় ইতিহাসের পাতায় দেখা আর বাস্তবে চিত্র প্রায় এক পরিবর্তন শুধুই সময়ের। উদাহরণ স্বরূপ বলাই যায় এ যেন এক ঢিলে দুই পাখি মারা। এক দিকে নিজের জন্য সেই জ্ঞান ভাণ্ডার থেকে কিছুটা জ্ঞান সংগ্রহ করে আনা আর তার সাথে ইতিহাসের সেই ছবি আর এক ধাপ কাছে থেকে দেখা। এত বড়ো প্রাপ্তির পর আবারও ফিরে আসা শান্তিনিকেতনে আর সেই সঙ্গে অপেক্ষা বসন্তের রঙে নিজেকে রাঙিয়ে নেওয়ার। 

Saturday, February 25, 2017


বক্সায় বসন্ত 


বসন্তের প্রকৃতির বন্ধু
সময় এখন বসন্তের আগমনের। প্রকৃতির স্পর্শে শিমূল, পলাশের রঙে চারিদিক রঙিন। প্রকৃতির অনন্য রঙের মেলায় ডানা মেলে রঙ ছড়িয়ে উড়ে বেড়ায় প্রজাপতি। প্রজাপতি, যার রঙে প্রকৃতি রঙিন আর তা খুব কাছে থেকে অনুভব করেছি আমাদের বক্সা টাইগার রিসার্ভের জঙ্গলে যা আমার দেখা এখনও পর্যন্ত সেরা মুহূর্তের একমাত্র। একদিকে সুন্দর সুন্দর পাখিরা ছুটেছে আর তাদের সাথে তাল মিলিয়ে বক্সার জঙ্গলে উড়ে বেড়াচ্ছে একগুচ্ছ রঙিন প্রজাপতির দল। প্রকৃতির প্রতি আমার আগ্রহ আর উতসাহ চূড়ান্ত সীমায়। নানা রঙের খেলায় নিজেকে সামিল করতে মাঝে মাঝেই ছুটে যাই জঙ্গলের পথে । ছবি তুলতে বেরিয়ে আমার ঝুলিতে পাখির সংখ্যা শতাধিক এর বেশি। সাথে সাথে প্রজাপতির সংখ্যাও ঝুলিতে বাড়িয়েই চলেছি। সব মিলিয়ে রীতি মতো এখন বক্সার জঙ্গলে চলছে বসন্তের আগমনের প্রস্তুতি। 

Sunday, February 19, 2017

শিল্প আর আমি


শুরু করেছি বেশ কিছুদিন, শেষ হবে জানিনা। পড়া আর পড়া-সবেতেই দরকার বিদ্যার। উচ্চশিক্ষা, বিদেশ ভ্রমণ, চাকরি সবেতেই। পাশাপাশি তো আছেই আঁকা (চিত্র অঙ্কন), ছবি তোলা (ফটোগ্রাফি), লেখা-লেখি, গল্প-আডডা আরও অনেকই। ছবি আঁকি এখনও, তবে বর্তমানে তা সখে আর ছবি তোলাটাও। একদিকে পেনসিল আর অন্যদিকে ক্যামেরা এখন অবসর সময় কাটানোর এটাই আমার সঙ্গী। তা মন্দ কি, রথ দেখা আর কলা বেচা দুই-ই হয় মানে একটা ছবিও হয় আবার চর্চাও। ছবি আঁকার সখটা অনেকদিনের, তাই একটা করে রং আর পেনসিল কিনতে কিনতে আজ পেনসিলের সংখ্যা যেন শতাধিক এরও বেশি তেমনই সেই সখও অলিখিত। ঠিক সেরকমই একদিন জেদ করে কিনে ফেললাম একটা ক্যামেরাও তাও আবার নিজের উপার্জনের। আর একটা সখ আছে যেটারও অসমাপ্তির দিন অজানা আর সেটা হল দেশের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়ানো, ছবি সংগ্রহ, আর তা নিয়েই অবসর সময়টা কাটানো। এই ছবি আঁকা, তোলা, সকলকে দেখিয়ে খুশি করা এই আমার আনন্দ।   

Tuesday, February 14, 2017

মেঘের হাতছানি


মেঘের চাদরে নকালিকায়
সময় এখন বসন্তের আগমনের। চারিদিকে দেখলেই মনে হচ্ছে প্রকৃতি যেন নানা রঙের আবিরে দোল খেলছে। বসন্তে একদিকে রঙবেরঙের গাছ-পাতা ঝরে গিয়ে নতুন পাতা গজানোর সময়। গত বছরে সেরকমই এক বসন্তে পারি দিয়েছিলাম উত্তর-পূর্ব ভারতের এক অনন্য সুন্দর ছবির মতো জায়গা, শহরটা শিলং। শহরটা যেন একটি আস্ত ক্যানভাস, চারিদিকে গারো আর খাসী পাহাড়ের অপূর্ব রুপ আর বড়ো বড়ো ঝর্না। একদিকে বসন্তের আমেজ সাথে পাহাড়ি ঝরর্না আর শিলং এর অপরূপ প্রাকৃতিক সুন্দর ছবি। শহরটা খুব একটা শান্ত-সাজানো গোছানো এবং সমস্ত রকমের সুবিধাপূর্ণ। শহরটা মেঘালয়ের অন্তর্গত, তাই প্রথমদিনে শহরের আশপাশ ঘুরেই পরেরদিন উদ্দেশ্য নিয়ে চললাম মৌসিনরাম। মেঘালয়ে এসে মৌসিনরাম না দেখাটা যেন টাইগার হিলে গিয়ে কাঞ্চনজঙ্ঘা না দেখার মতন অসম্পূর্ণ। তাতে যেন উত্তর-পূর্ব ভারতের অনেকটা অসম্পূর্ণ ভ্রমণ। বর্তমানে উষঞায়নের জন্যে প্রকৃতির মন খারাপের জন্যে মৌসিনরাম সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত না হলেও এখনকার রুপটাও খুব একটা খারাপ না। রাস্তায় পথ চলতে সুইট ফলস্(Sweet Falls), আবার কোথাও এলিফ্যান্ট ফলস্ (Elephant Falls), নকালিকায় ফলস্ (Nohkalikai Falls), সেভেন-সিস্টার ফলস্ (Seven-Sister Falls) আর তাদের ভয়ঙ্কর সুন্দর রুপ- যেন পাহাড় থেকে দুধের ঝর্না বয়ে চলেছে। তার থেকেও সুন্দর আর একটা রুপ হল সাদা মেঘের খেলা- পেঁজা তুলোর মতো ভেসে যাচ্ছে। চারিদিকে গারো খাসী পাহাড় আর সেখানকার জনবসতির জীবনযাপন আর সাথে সেই অপরূপ সুন্দর ছবি যেন এক বিরাট প্রাপ্তি। সব কিছু দেখার পরও চোখে শুধু ভাসে মেঘের ফাঁক দিয়ে নকালিকায় ফলস্-এর সেই নজরকাঁড়া দৃশ্য সেভেন-সিস্টার ফলসটা তো সাতটা জলপ্রবাহ সন্মিলিত হয়ে তৈরি হওয়া একটা গড়িয়ে যাওয়া ঝর্না। দিনের শেষে এরকম সুন্দর সুন্দর দৃশ্যের ক্যানভাস দেখতে দেখতে কখন যে একটা মস্ত বড়ো ছবির কোলাজ তৈরি হয়ে গেল তা এখনও আমার ভাবনায়। এই অভিজ্ঞতার মাঝে বাকি রয়ে গেল প্রকৃতির তৈরি সেই রুটব্রিজ আর বিশ্বের সবচেয়ে পরিষ্কার গ্রামের স্বাদ। তবে এরুপ ভোলার নয়। 

Thursday, February 2, 2017

"ভাষা-শিক্ষা-শিক্ষিত"


 শিক্ষার পরিবেশে শান্তিনিকেতনের পাঠভবন
শিক্ষা-আমার, তোমার, সবার আধিকার। দৈনিক খাদ্য-বস্ত্র-বাসস্থান এর পাশাপাশি শিক্ষাও হয়ে উঠেছে আমাদের জীবনসঙ্গী। শৈশবে প্রাথমিক শিক্ষা থেকে মধ্য ও তারপর উচ্চস্তরীয় শিক্ষায় বদ্ধ আমাদের জীবন। একটি দেশ গড়ে ওঠে বিভিন্ন ভাষা-ধর্মের একটি পরিবারকে নিয়ে। কথা, খাদ্য, রুজিরোজগার, এবং জীবন ধারণের সমস্ত তালার চাবি এই শিক্ষা। শিক্ষা যেমন জীবনে সুখের প্রদীপ জ্বালিয়ে আলোকিত করে তেমনই অশিক্ষার কালো ছায়া জীবনের সমাপ্তির দড়ি টেনে ধরে। বর্তমান বিশ্ব দাড়িয়ে ঠিক মাঝখানে। অর্থাৎ আমাদের ভারত তথা বিশ্বে এখনও তুলনামূলকভাবে শিক্ষিতর সংখ্যা বেশী হলেও অশিক্ষা-অজ্ঞতার ছায়া-ছবি পরিষ্কার। দিনে দিনে বেড়েই চলেছে উচ্চস্তরের শিক্ষার উচ্চতা আর চলেছে অধিক জ্ঞান অর্জনের দৌড়ে অংশগ্রহণকারীদের নাম। স্বদেশ থেকে বিদেশ সবাই ছুটে চলেছে নিজের জ্ঞানের ঝুলি পূর্ণ করতে।
সকলেরই ইচ্ছে হয় উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হতে কিন্তু বাধা দেয় সমাজ অথবা অর্থ নামক পিছুটান। কেউ তৈরি হচ্ছে ডাক্তার, শিক্ষক অথবা অন্যান্য সরকারি বা বেসরকারি চাকরির উচ্চপদস্থ আধিকারিক আর কেউ সেই সময়ে করছে কিছু অসামাজিক কাজ বা কেউ করছে এমন যা তার জীবন যাপনের সহায় মাত্র। ভারতবর্ষ স্বাধীনের পর ভাষা নিয়ে চলে দীর্ঘ আন্দোলন, প্রতি বছর ২১ শে ফেব্রুয়ারি পালিত হয় এই দিনটি, স্মরণ করা হয় সেই শহিদদের। বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে চলছে দেশকে শিক্ষিত করার পরিকল্পনা। এখন দেখার তাদের এই আন্দোলনের মশাল আর বিভিন্ন উদ্যোগ ও বিভিন্ন যৌথ প্রয়াস অশিক্ষার জাল ছিঁড়ে দেশকে শিক্ষিত করার দৌড়ে কতটা এগোতে পারে। পরিবর্তনের সেই ছায়াছবি দেখার জন্যে তাকিয়ে সবাই। কথায় আছে-“আলো অন্ধকারকে কাটে”, তাই দেশের সেই সকল শিক্ষিতদের দরকার শিক্ষার প্রদীপটি জ্বালিয়ে রাখা তাহলে এটাই হবে তাদের আর এক উচ্চ শিক্ষার বিষয়। তাহলেই সফল ২১-শের ভাষা আন্দোলন, সফল সেই সব শহিদের সেদিনের অংশগ্রহণ।

Saturday, January 28, 2017

                      "প্রাকৃতিক বসন্ত"


শান্তিনিকেতন, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি বিজড়িত স্থান যেখানে আছে তার সাধের বাসভবন আর আছে আমাদেরকে উপহার দেওয়া বিশ্বভারতী। বিভিন্ন বিষয় এর উপর শিক্ষা দানের পাশাপাশি নিয়ম মেনে এখনও পরানো হয় খোলা আকাশের নিচে। এর পেছনে কবিগুরুর উদ্দেশ্য ছিল প্রকৃতির সাথে মেলবন্ধন। বর্তমানেও শান্তিনিকেতনে সমস্ত নিয়ম মেনে পালিত হয় সমস্ত উৎসব যেমন- পৌষ উৎসব, বসন্ত উৎসব, বৃক্ষরোপণ, হলকর্ষণ ইত্যাদি আর সাথে বৈতালিক। বারো মাসে তেরো পার্বণের মতো শান্তিনিকেতনও যেন হয়ে উঠেছে একগুচ্ছ আনন্দের ও মেল্বন্ধনের উৎসব। আর কিছুদিনের পরই বসন্তের ডাকে সাড়া দিয়ে সবাই মেতে উঠবে আনদের রঙে-প্রকৃতির রঙে। সকলের দোল মানেই শান্তিনিকেতনের বসন্ত উৎসব। দেশে বিদেশের বহু লোকজন ছুটে আসে এই রঙের টানে। বৈতালিক দিয়ে শুরু করে শান্তিনিকেতনে সে কটা দিন যেন চাঁদের হাট। সকলে এখানকার রীতি মেনে ঐতিহ্যবাহী বস্ত্র, লাল পলাশের প্রাকৃতিক রঙের ব্যবহারে সকলের মিলে মিশে যেন এক পরিবার। কবিগুরুর উদ্দেশ্য সকলকে এক বন্ধনে আবদ্ধ করা আর এই ছবি দেখতে পাওয়া যায় এই সব দিনগুলিতে। শান্তিনিকেতনে প্রাকৃতিক লাল পলাশের তৈরি রঙের ব্যবহার বোঝাতে এই সাংকেতিক ছবির ব্যবহার।