দুর্গমতার মাঝে আনন্দ
“এই পথ যদি না শেষ হয়………… যদি পৃথিবীটা স্বপ্নের দেশ হয়, তবে
কেমন হত তুমি বলত”। দেশের বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ আমার একটা নেশায় পরিণত হয়েছে। বেশ কয়েকটা
রাজ্যই আমার দেখা। তবে তার মধ্যে সিকিমটা যেন একটু অন্যরকম। চারিদিকে পাহাড় আর শীতের
একটা অনুভূতি, আবার কিছুটা এগোতেই যেন চারিদিক বরফে ঢাকা। সিকিম একটি সাজানো গোছানো শহর যার চারিদিকে রয়েছে
সুন্দর পাহাড় ঘেরা প্রাকৃতিক দৃশ্য আর শহরটা যেন মেঘের উপর ভাসছে । যাবার পথেই প্রথম
অনুভূতি মেঘের সাথে খেলা। খুব একটা পরিষ্কার জায়গা সিকিম আর চারিদিক যেন ছবির মতো আঁকা।
ছিলাম শহরের মাঝখানেই, আর তার পাশেই ছিল মহাত্মা গান্ধী মার্গ- যেখানে সন্ধ্যে হলেই
শুরু হয় বিভিন্ন ভাষাভাষীর লোকেদের আগমন। সময় ছিল সীমিত তাই আর দেরি না করে পরেরদিন
বেরিয়ে পড়লাম শহরের আশেপাশের সুন্দর জায়গায় ঘুরতে আর সাথে নিয়ে আমার ক্যামেরা টা। এক
পাহাড় থেকে অন্য পাহাড়ের বুক চিরে এগিয়ে চলেছি আর দেখছি সুন্দর সব জায়গা। এ যেন দিন
ফুরলেও মন ভরে না। সারাদিন ঘুরে আর কনকনে ঠাণ্ডার চাদর চাপিয়েই চলল এদিক ওদিক ঘোরা।
পরেরদিনের উদ্দেশ্য উত্তর সিকিমের কিছু জায়গা। সকালে যতই সেদিকে এগিয়ে চলছি ততই যেন
মনে হচ্ছে ঠাণ্ডা বাড়ছে। সেখানকার পথ গুলো কিছুটা দুর্গম কিন্তু আনন্দদায়ক আর চারিদিকে
সাদা বরফে ঢাকা। স্থানিয়রা কাজ করছে বরফ সরিয়ে রাস্তা তৈরি করতে আর আমরা এগিয়ে চলেছি
সেই পথ ধরে। মাঝে একটু বিরতি-জায়গার নাম ছাঙ্গু বাজার। স্থানিয়দের তৈরি খাবার খেয়ে
আবার বেরলাম সামনের দিকে পরবর্তী উদ্দেশ্য ছাঙ্গু লেক আর ভারত-চীনের আন্তর্জাতিক সিমানা।
লেক্ টা পুরোই বরফে ঢাকা আর পাশেই দাড়িয়ে চমরীগাইদের
নিয়ে তাদের মালিক, কিছু টাকা উপার্জনের জন্য। দিনের আকাশটা ছিল খুবই ভালো তাই মজাও
ছিল দ্বিগুণ। দিনের শেষে ফেরার পথে মাঝ রাস্তায় পেলাম বৃষ্টির, তবে কিছুটা ভয় আর মজা
নিয়েই এগচ্ছি সামনের দিকে হঠাৎ শুরু হল বরফ পড়া যা ছিল আমাদের সকলের আশার বাইরে। যাইহোক
সেই সময় সবাই গাড়ি থেকে নেমে মজা নিলাম তার। পথে ফেরার সময় মনে পরছিল সেই সব কাটিয়ে
আসা মজা আর আন েন্দর কথা যা ভোলার নয়। পাহাড়ের উপর থেকে ছাঙ্গুর ছবিটা যেন অসাধারন।
২/৩ দিন সেরকম কাটিয়ে ফিরে এলাম বাড়ির পথে। তবে সেই শেষ মুহূর্তের মজাটা যেন আর কয়েকবার
যাবার আগ্রহটাকে আর বাড়িয়ে দিল।
No comments:
Post a Comment