Saturday, February 25, 2017


বক্সায় বসন্ত 


বসন্তের প্রকৃতির বন্ধু
সময় এখন বসন্তের আগমনের। প্রকৃতির স্পর্শে শিমূল, পলাশের রঙে চারিদিক রঙিন। প্রকৃতির অনন্য রঙের মেলায় ডানা মেলে রঙ ছড়িয়ে উড়ে বেড়ায় প্রজাপতি। প্রজাপতি, যার রঙে প্রকৃতি রঙিন আর তা খুব কাছে থেকে অনুভব করেছি আমাদের বক্সা টাইগার রিসার্ভের জঙ্গলে যা আমার দেখা এখনও পর্যন্ত সেরা মুহূর্তের একমাত্র। একদিকে সুন্দর সুন্দর পাখিরা ছুটেছে আর তাদের সাথে তাল মিলিয়ে বক্সার জঙ্গলে উড়ে বেড়াচ্ছে একগুচ্ছ রঙিন প্রজাপতির দল। প্রকৃতির প্রতি আমার আগ্রহ আর উতসাহ চূড়ান্ত সীমায়। নানা রঙের খেলায় নিজেকে সামিল করতে মাঝে মাঝেই ছুটে যাই জঙ্গলের পথে । ছবি তুলতে বেরিয়ে আমার ঝুলিতে পাখির সংখ্যা শতাধিক এর বেশি। সাথে সাথে প্রজাপতির সংখ্যাও ঝুলিতে বাড়িয়েই চলেছি। সব মিলিয়ে রীতি মতো এখন বক্সার জঙ্গলে চলছে বসন্তের আগমনের প্রস্তুতি। 

Sunday, February 19, 2017

শিল্প আর আমি


শুরু করেছি বেশ কিছুদিন, শেষ হবে জানিনা। পড়া আর পড়া-সবেতেই দরকার বিদ্যার। উচ্চশিক্ষা, বিদেশ ভ্রমণ, চাকরি সবেতেই। পাশাপাশি তো আছেই আঁকা (চিত্র অঙ্কন), ছবি তোলা (ফটোগ্রাফি), লেখা-লেখি, গল্প-আডডা আরও অনেকই। ছবি আঁকি এখনও, তবে বর্তমানে তা সখে আর ছবি তোলাটাও। একদিকে পেনসিল আর অন্যদিকে ক্যামেরা এখন অবসর সময় কাটানোর এটাই আমার সঙ্গী। তা মন্দ কি, রথ দেখা আর কলা বেচা দুই-ই হয় মানে একটা ছবিও হয় আবার চর্চাও। ছবি আঁকার সখটা অনেকদিনের, তাই একটা করে রং আর পেনসিল কিনতে কিনতে আজ পেনসিলের সংখ্যা যেন শতাধিক এরও বেশি তেমনই সেই সখও অলিখিত। ঠিক সেরকমই একদিন জেদ করে কিনে ফেললাম একটা ক্যামেরাও তাও আবার নিজের উপার্জনের। আর একটা সখ আছে যেটারও অসমাপ্তির দিন অজানা আর সেটা হল দেশের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়ানো, ছবি সংগ্রহ, আর তা নিয়েই অবসর সময়টা কাটানো। এই ছবি আঁকা, তোলা, সকলকে দেখিয়ে খুশি করা এই আমার আনন্দ।   

Tuesday, February 14, 2017

মেঘের হাতছানি


মেঘের চাদরে নকালিকায়
সময় এখন বসন্তের আগমনের। চারিদিকে দেখলেই মনে হচ্ছে প্রকৃতি যেন নানা রঙের আবিরে দোল খেলছে। বসন্তে একদিকে রঙবেরঙের গাছ-পাতা ঝরে গিয়ে নতুন পাতা গজানোর সময়। গত বছরে সেরকমই এক বসন্তে পারি দিয়েছিলাম উত্তর-পূর্ব ভারতের এক অনন্য সুন্দর ছবির মতো জায়গা, শহরটা শিলং। শহরটা যেন একটি আস্ত ক্যানভাস, চারিদিকে গারো আর খাসী পাহাড়ের অপূর্ব রুপ আর বড়ো বড়ো ঝর্না। একদিকে বসন্তের আমেজ সাথে পাহাড়ি ঝরর্না আর শিলং এর অপরূপ প্রাকৃতিক সুন্দর ছবি। শহরটা খুব একটা শান্ত-সাজানো গোছানো এবং সমস্ত রকমের সুবিধাপূর্ণ। শহরটা মেঘালয়ের অন্তর্গত, তাই প্রথমদিনে শহরের আশপাশ ঘুরেই পরেরদিন উদ্দেশ্য নিয়ে চললাম মৌসিনরাম। মেঘালয়ে এসে মৌসিনরাম না দেখাটা যেন টাইগার হিলে গিয়ে কাঞ্চনজঙ্ঘা না দেখার মতন অসম্পূর্ণ। তাতে যেন উত্তর-পূর্ব ভারতের অনেকটা অসম্পূর্ণ ভ্রমণ। বর্তমানে উষঞায়নের জন্যে প্রকৃতির মন খারাপের জন্যে মৌসিনরাম সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত না হলেও এখনকার রুপটাও খুব একটা খারাপ না। রাস্তায় পথ চলতে সুইট ফলস্(Sweet Falls), আবার কোথাও এলিফ্যান্ট ফলস্ (Elephant Falls), নকালিকায় ফলস্ (Nohkalikai Falls), সেভেন-সিস্টার ফলস্ (Seven-Sister Falls) আর তাদের ভয়ঙ্কর সুন্দর রুপ- যেন পাহাড় থেকে দুধের ঝর্না বয়ে চলেছে। তার থেকেও সুন্দর আর একটা রুপ হল সাদা মেঘের খেলা- পেঁজা তুলোর মতো ভেসে যাচ্ছে। চারিদিকে গারো খাসী পাহাড় আর সেখানকার জনবসতির জীবনযাপন আর সাথে সেই অপরূপ সুন্দর ছবি যেন এক বিরাট প্রাপ্তি। সব কিছু দেখার পরও চোখে শুধু ভাসে মেঘের ফাঁক দিয়ে নকালিকায় ফলস্-এর সেই নজরকাঁড়া দৃশ্য সেভেন-সিস্টার ফলসটা তো সাতটা জলপ্রবাহ সন্মিলিত হয়ে তৈরি হওয়া একটা গড়িয়ে যাওয়া ঝর্না। দিনের শেষে এরকম সুন্দর সুন্দর দৃশ্যের ক্যানভাস দেখতে দেখতে কখন যে একটা মস্ত বড়ো ছবির কোলাজ তৈরি হয়ে গেল তা এখনও আমার ভাবনায়। এই অভিজ্ঞতার মাঝে বাকি রয়ে গেল প্রকৃতির তৈরি সেই রুটব্রিজ আর বিশ্বের সবচেয়ে পরিষ্কার গ্রামের স্বাদ। তবে এরুপ ভোলার নয়। 

Thursday, February 2, 2017

"ভাষা-শিক্ষা-শিক্ষিত"


 শিক্ষার পরিবেশে শান্তিনিকেতনের পাঠভবন
শিক্ষা-আমার, তোমার, সবার আধিকার। দৈনিক খাদ্য-বস্ত্র-বাসস্থান এর পাশাপাশি শিক্ষাও হয়ে উঠেছে আমাদের জীবনসঙ্গী। শৈশবে প্রাথমিক শিক্ষা থেকে মধ্য ও তারপর উচ্চস্তরীয় শিক্ষায় বদ্ধ আমাদের জীবন। একটি দেশ গড়ে ওঠে বিভিন্ন ভাষা-ধর্মের একটি পরিবারকে নিয়ে। কথা, খাদ্য, রুজিরোজগার, এবং জীবন ধারণের সমস্ত তালার চাবি এই শিক্ষা। শিক্ষা যেমন জীবনে সুখের প্রদীপ জ্বালিয়ে আলোকিত করে তেমনই অশিক্ষার কালো ছায়া জীবনের সমাপ্তির দড়ি টেনে ধরে। বর্তমান বিশ্ব দাড়িয়ে ঠিক মাঝখানে। অর্থাৎ আমাদের ভারত তথা বিশ্বে এখনও তুলনামূলকভাবে শিক্ষিতর সংখ্যা বেশী হলেও অশিক্ষা-অজ্ঞতার ছায়া-ছবি পরিষ্কার। দিনে দিনে বেড়েই চলেছে উচ্চস্তরের শিক্ষার উচ্চতা আর চলেছে অধিক জ্ঞান অর্জনের দৌড়ে অংশগ্রহণকারীদের নাম। স্বদেশ থেকে বিদেশ সবাই ছুটে চলেছে নিজের জ্ঞানের ঝুলি পূর্ণ করতে।
সকলেরই ইচ্ছে হয় উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হতে কিন্তু বাধা দেয় সমাজ অথবা অর্থ নামক পিছুটান। কেউ তৈরি হচ্ছে ডাক্তার, শিক্ষক অথবা অন্যান্য সরকারি বা বেসরকারি চাকরির উচ্চপদস্থ আধিকারিক আর কেউ সেই সময়ে করছে কিছু অসামাজিক কাজ বা কেউ করছে এমন যা তার জীবন যাপনের সহায় মাত্র। ভারতবর্ষ স্বাধীনের পর ভাষা নিয়ে চলে দীর্ঘ আন্দোলন, প্রতি বছর ২১ শে ফেব্রুয়ারি পালিত হয় এই দিনটি, স্মরণ করা হয় সেই শহিদদের। বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে চলছে দেশকে শিক্ষিত করার পরিকল্পনা। এখন দেখার তাদের এই আন্দোলনের মশাল আর বিভিন্ন উদ্যোগ ও বিভিন্ন যৌথ প্রয়াস অশিক্ষার জাল ছিঁড়ে দেশকে শিক্ষিত করার দৌড়ে কতটা এগোতে পারে। পরিবর্তনের সেই ছায়াছবি দেখার জন্যে তাকিয়ে সবাই। কথায় আছে-“আলো অন্ধকারকে কাটে”, তাই দেশের সেই সকল শিক্ষিতদের দরকার শিক্ষার প্রদীপটি জ্বালিয়ে রাখা তাহলে এটাই হবে তাদের আর এক উচ্চ শিক্ষার বিষয়। তাহলেই সফল ২১-শের ভাষা আন্দোলন, সফল সেই সব শহিদের সেদিনের অংশগ্রহণ।